সিবিএন ডেস্ক ;

কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করবে। আইনগত নিষেধাজ্ঞার কারণে উখিয়ার ইনানী থেকে সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চালুর কোনো সুযোগ নেই।

সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে পাঠানো এক চিঠিতে নীতিগত সম্মতির বিষয়টি জানানো হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে ইনানী থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চালুর প্রচারণা চালানো হচ্ছিল। এতে পর্যটকরা বিভ্রান্তিতে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানানো হলো।

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতকে “প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ECA)” ঘোষণা করা হয়। ইনানী জেটি যেহেতু ওই এলাকায় অবস্থিত, সেখানে নৌরুট চালু হলে জাহাজ, ট্রলার ও ক্রুজশিপ চলাচল বাড়বে, যা জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই আইনগতভাবে ইনানী-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ। বিকল্প হিসেবে নুনিয়ারছড়া ঘাট ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগের নিয়মেই নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলবে।”

এর আগে ২২ অক্টোবর পরিবেশ মন্ত্রণালয় দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১২ দফা নির্দেশনা জারি করে। এতে অনুমোদনবিহীন নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয় এবং পর্যটকদের কিউআর কোডযুক্ত ট্রাভেল পাসসহ অনলাইন টিকিট কেনার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র দিনের বেলায় ভ্রমণ করা যাবে; ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপন করা যাবে; ফেব্রুয়ারিতে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে যেতে পারবেন।

দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, মোটরযান চলাচল, কেয়াবনে প্রবেশ ও প্রবাল বা সামুদ্রিক প্রাণী সংগ্রহ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও পলিথিনও বহন করা যাবে না।

সরকার আশা করছে, এসব নিয়ম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশবান্ধব ও দায়িত্বশীল পর্যটনের একটি মডেল হয়ে উঠবে।